দশ বছরের অপেক্ষার পর মুক্তি পেতে চলেছে ‘ধূমকেতু’, বাংলার পর্দায় উচ্ছ্বাসের জোয়ার - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, August 13, 2025

দশ বছরের অপেক্ষার পর মুক্তি পেতে চলেছে ‘ধূমকেতু’, বাংলার পর্দায় উচ্ছ্বাসের জোয়ার


 কোথা দিয়ে দশটা বছর কেটে গেল, টেরই পেলাম না! জন্মের পর হারিয়ে যাওয়া এক সন্তানের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম আমি। অবশেষে প্রযোজক দেব ও রানা সরকার তাকে ফিরিয়ে আনলেন। ১৪ তারিখে সেই সন্তানের নতুন যাত্রা শুরু হবে—স্কুলে যাওয়া, অসংখ্য মানুষের সঙ্গে পরিচয়। আমি ও আমরা আবেগে ভেসে যাচ্ছি। ভাবনার বীজ থেকে গল্প, গল্প থেকে চিত্রনাট্যের যৌবনে পৌঁছে ‘ধূমকেতু’ আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল। ছবিটি তৈরি হওয়ার পর এত বছরের জমে থাকা উত্তেজনা যেন আগ্নেয়গিরির মতো ফেটে পড়ল মুক্তির দিন ঘনিয়ে আসতেই।

দশ বছর সময় কম নয়। এ সময় সমাজ বদলেছে, মানুষ বদলেছে, সিনেমার ভাষা ও আঙ্গিক বদলেছে। বদলেছি আমরাও—দেব, শুভশ্রী, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি। এখন দর্শক আর শুধু বিদেশি লোকেশনের গান দেখে হলমুখী হয় না, নতুন স্বাদের ছবির খোঁজ করে। এই বদলের সাড়া দিয়েছিল ‘ধূমকেতু’। আজও তার আবেগের তীব্রতা অটুট। বুদ্ধিমান শিল্পীরা সময়ের স্রোত বুঝে নতুন পথে এগিয়ে যায়—দেব ‘বুনোহাঁস’ থেকে শুরু করে ভিন্ন ধারার বহু সফল ছবি উপহার দিয়েছেন, শুভশ্রীও ‘পরিণীতা’, ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ ইত্যাদি ছবির মাধ্যমে শহুরে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। আমি নিজেও এই সময়ে ‘খাদ’, ‘বিসর্জন’, ‘নগরকীর্তন’, ‘অর্ধাঙ্গিনী’-এর মতো কাজ করেছি।

জেলায় জেলায় পুরনো সিনেমা হল বদলে গেছে মাল্টিপ্লেক্সে। এমন সময়ে ‘ধূমকেতু’ আছড়ে পড়ল আকাশে দে-শু জুটি হয়ে। অগ্রিম বুকিং এক সপ্তাহ আগেই খুলে দেওয়া সত্ত্বেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না দর্শকের ঢল। হিন্দি ছবির শো কমিয়ে বাংলার এই ছবির শো বাড়ানো হচ্ছে—এটাই বড় সাফল্য। দক্ষিণ ভারত, মারাঠি বা পাঞ্জাবি ছবির মতোই আমাদের মাতৃভাষার ছবিকে সম্মান ও ভালোবাসা দিতে হবে। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার অভাবে বাংলা বারবার পিছিয়ে পড়েছে। কিন্তু এবার সরকারের উদ্যোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এসেছে—প্রাইম টাইমে বাংলার সব হলে ৫০% শো বাংলা ছবির জন্য বাধ্যতামূলক। বহু বছরের অপেক্ষার পর এ এক বড় জয়, আর ‘ধূমকেতু’ তার সেতু হয়ে এল।

দর্শক কেবল সোশ্যাল মিডিয়ায় মতামত দেবে, ছবি পোস্ট করবে—এতে হবে না; তাঁরা টিকিট কেটে হলমুখী হলে বাংলা ছবির আসল শক্তি ফের জেগে উঠবে। ‘ধূমকেতু’র অ্যাডভান্স বিক্রির সাফল্যে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে। এখন নির্মাতাদের দায়িত্ব ধারাবাহিকভাবে মানসম্মত ছবি বানিয়ে যাওয়া, হল মালিকদের সঙ্গে আস্থা তৈরি করা। শুধু অভিযোগে লাভ নেই—শিল্পে বা খেলায় আসল প্রমাণ মাঠে হয়।

১৪ আগস্ট থেকে বড় পর্দায় ‘ধূমকেতু’র যাত্রা শুরু হবে। ১০ বছরের অপেক্ষার পর আসছে এই বিশেষ মুহূর্ত—আগাম শুভদর্শন বাংলার সিনেমাপ্রেমীদের জন্য।


No comments:

Post a Comment

Post Top Ad